ফল ফাঁটা (Fruit
Creviced)
পোষক:
লেবু জাতীয় ফল, লিচু, পেয়ারা, আম, ডালিম, সফেদা, কাঁঠাল, জলপাই, আতা, বেগুন, কলা, টমেটো, প্রভৃতি।
লক্ষণ:
১. সাধারণতঃ ফল বড় হওয়ার পর অর্থাৎ ফল পুষ্ট হওয়ার পূর্ব মুহূর্তে ফাঁটা শুরু হয়।
২. ফল ফাঁটা সাধারণত লম্বালম্বি ভাবে হয়ে থাকে।
৩. ফল ফেঁটে যাওয়ার প্রক্রিয়াটি খুব দ্রুত সম্পন্ন হয় এবং উক্ত ফাঁটা জায়গায় রোগ জীবাণুর আক্রমণ ঘটে।
৪. মূলতঃ খরা বা অনাবৃষ্টির সময় ফলের জাইলেম ও ফ্লোয়েম কোষে অনাকাংখিত আবহাওয়া থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কিছু শক্তিশালী কোষের উৎপন্ন হয় যা বিভক্ত হওয়ার বা বৃদ্ধি পাওয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে তাই ফল ফেঁটে যায়।
৫. ফল ফেঁটে যাওয়ার জন্য আরো কিছু ফেক্টর দায়ী যেমন- আবহাওয়া জনিত, হরমোনজনিত, জাতের বৈশিষ্ট্য জনিত, পুষ্টির অভাব জনিত, মাটির আর্দ্রতা জনিত, রোগ, পোকার আক্রমণ ও আঘাত জনিত হয়ে থাকে।
নিরাপদ ফসল উৎপাদন ব্যবস্থাপনা:
১. যে সব জাত ফাঁটল প্রতিরোধক/ সংবেদনশীল সে গুলোর চাষাবাদ করতে হবে।
২. ফল বৃদ্ধির সময় গাছে নিয়মিত ও পরিমিত পরিমাণ সেচ প্রদান করলে মাটির আর্দ্রতা / রস বৃদ্ধি এবং বাতাসের তাপমাত্রা কমে গেলে ফল ফাঁটল কমে যাবে।
৩. মাটিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে জৈব সার প্রয়োগ করতে হবে। জৈব সার প্রয়োগে মাটির পানি ধারণ ক্ষমতা বাড়ায়। ফলে বিরূপ আবহাওয়া মাটির রস দ্রুত হ্রাস বৃদ্ধির হার কম হয়। উপরন্তু, জৈব সারে সব ধরণের পুষ্টি উপাদান থাকায় মাটির অপুষ্টি জনিত সমস্যাও দূর হয়।
রাসায়নিক পদ্ধতিতে দমন:
১. বিভিন্ন প্রকার হরমোন স্প্রে করে ফলের পরিপক্কতা দীর্ঘায়িত করা এবং খোসার সম্প্রসারণ ক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ফল ফাঁটা রোধ করা যায়। যেমন- ন্যাপথালিন এসিটিক এসিড (NAA) ২৫ পিপিএম হারে এর সাথে জিবরোলিক এসিড ৫০ পিপিএম হারে ১০ দিন পর পর স্প্রে করে ফাঁটল রোধ করা সম্ভব।
২. ফল বৃদ্ধির সময় জিংক সালফেট ( প্রতি লিটারে ৫ গ্রাম), বোরাক্স/ বরিক এসিড ( প্রতি লিটারে ৫ গ্রাম) একত্রে বা আলাদা আলাদা ভাবে স্প্রে করলে ফল ঝড়ে পড়া ও ফাঁটা উভয় সমস্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে যায়।
সুভাষ চন্দ্র দত্ত
উপ সহকারী কৃষি অফিসার, ডবলমুরিং, চট্টগ্রাম।
ই-মেইল: subhashdutta777@gmail.com
Comments
Post a Comment