গোড়া/শিকড় পঁচা বা ড্যাপিং অফ (Damping off)
পোষক-
বেগুন, টমেটো, মূলা, মরিচ, গাজর, পেঁপে, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ব্রোকলি, শালগম, লেবু জাতীয় ফল, কুমড়া জাতীয় সবজি।
লক্ষণ:
১. আক্রান্ত চারার গোড়া বা শিকড় পঁচে গিয়ে ঢলে পড়ে।
২. চারার গোড়ায় মাটি সংলগ্ন অংশে বাদামী রং এর পানি ভেজা দাগ দেখা যায়।
৩. আর্দ্র ও স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়ায় আক্রান্ত অংশে ছত্রাক দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
৪. রোগটি মাটিবাহিত বিধায় আক্রান্ত চারা মাটি ও পানির মাধ্যমে বিস্তার লাভ করে।
৫. অল্প দিনের ব্যবধানে সমস্ত চারা নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
নিরাপদ ফসল উৎপাদন ব্যবস্থাপনা
১. মাটি ও বীজ শোধন করতে হবে।
মাটি শোধনঃ- প্রতি লিটার পানির সাথে ১০০ মিলিলিটার ফরমালডিহাইড মিশিয়ে মাটিতে ছিটিয়ে দিয়ে পুরো মাটির উপরে মোটা পলিথিন দিয়ে ৩/৪ দিন ঢেকে রাখতে হবে। পরবর্তী ৩/৪ দিন পরে পলিথিন উঠিয়ে সূর্যের আলোর তাপে খুলে রাখতে হবে । ফরমালিনের গন্ধ মাটি থেকে শেষ হয়ে গেলেই মাটিতে বীজ বপন করার জন্য উপযোগী হবে।
বীজ শোধনঃ- এক লিটার পানিতে ২-৩ গ্রাম হারে প্রোভক্স বা কার্বেন্ডাজিম বা আইপ্রোডিওন নামক ছত্রাকনাশক মিশিয়ে ৪-৫ ঘন্টা বীজ ভিজিয়ে রেখে আবার পরিষ্কার পানিতে বীজ গুলো ধুয়ে বীজ বপন করতে হবে।
২. ছায়া যুক্ত স্থানে বীজতলা না করা।
৩. পরিমিত পানি সেচ ও জৈব সার ব্যবহার করা।
৪. ঘন করে বীজ না বুনে পাতলা করে বীজ বোনা।
৫. সেচ বা বৃষ্টির পানি পরার পর চারার গোড়ার মাটি আলগা করে দেয়া।
বোর্দো মিক্সচার দ্বারা দমন
আক্রান্ত গাছে ১০ গ্রাম চুন, ১০ গ্রাম তুঁতে ৫০০ মিঃলিঃ পানিতে আলাদা আলাদা পাত্রে চুন ও তুঁতে মিশ্রণ করে একই সময়ে পানি অন্য পাত্রে ঢেলে বোর্দো মিক্সচার তৈরি করে চারার গোড়ায় স্প্রে করতে হবে।
রাসায়নিক পদ্ধতিতে দমন
আক্রমণ মাত্রা বেশি হলে নিচে উল্লেখিত যেকোন একটি ছত্রাকনাশক ব্যবহার করুন, যেমন– নির্ভয়-১০ এসএল ৩ মিলি/ লিটার পানি/ থিয়োভিট- ৮০ ডব্লিউপি ২ গ্রাম/ লিটার পানি/ গিলজিম-৫০ ডব্লিউপি ১ গ্রাম/ লিটার পানি/ বাইমিল- ৭২ ডব্লিউপি ২ গ্রাম/ লিটার পানি / এল সাইক্লাজোল ৭৫ ডব্লিউপি ২ গ্রাম/ লিটার পানি ৫-৭ দিন পর পর ৩ বার গাছে ও মাটিতে স্প্রে করুন।
সুভাষ চন্দ্র দত্ত
উপ সহকারী কৃষি অফিসার
ডবলমুরিং, চট্টগ্রাম।
Comments
Post a Comment